বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

খাই খাই কোর নাকো বসে যাও চেয়ারে। রান্নাটা কিরকম টের পাবে এবারে। রাঁধুনী সে রন্ধনে অতি পটিয়সী, হাতার বদলে তার হাতে আছে অসি। আহার ভোজনে যারা নয় তত দক্ষ, তাদেরও গেলাতে পারে ভক্ষ্য-অভক্ষ্য। কলমীর রস দেয়,দেয় চায়ে নুন, খেয়ে দেখো এ চায়ে আছে কত গুন। দুধ জ্বাল দিয়ে তাতে রসুন ফোড়ন, না খেলে যায় না বোঝা এ চীজ কেমন। পায়েসে আদা বাটা রেসিপি নতুন, খেলে তবে বুঝবে রাঁধুনীর গুণ, মুরগীর দুধ আর বাছুরের ডিম, খেতে বসে মাথাটা যে করে ঝিমঝিম। পেঁয়াজের রস আর হলুদের বাটা, বানায় পরোটা দেখি নেই তাতে আটা। কাঠাঁলের খোসা দিয়ে লঙ্কার বড়ি, লা-জবাব খাবার রে, আহা মরি মরি। বালি দিয়ে ডাল আর পাথরের ডালনা, পাঁচতারা হোটেলে খুঁজলেও পাবে না। আর কিছু দেব নাকি?শুনে বলি, “বাবারে! এবার রেহাই দে, দয়া কর আমারে।“ গুড়গুড়ি রাঁধুনীটা একেবারে শিশুরে, খাওয়াটা কেমন হল বোঝা যাবে ঢেঁকুরে।
গগনে গনগনে মেঘ, রৌদ্রে ফরসা। বাসস্টপেজে দাঁড়িয়ে ঘামছি, নাহি ভরসা। ভাংতি ভাংতি টাকা দ্বারা টিকিট কাটা হলো সারা, রাস্তা জ্যামে ক্ষুরধারা খরপরশা- কাটিতে কাটিতে সময় বাস আসে না সহসা। একখানি ছোট কাউন্টার আমি একেলা- চারিদিকে যানবহন করিছে খেলা। দূর সিগন্যালে দেখি আকা লাল বাতি মাখা রাস্তাখানি ধূলোয় ঢাকা অফিসবেলা। এ স্টপেজে ছোট কাউন্টার আমি একেলা। হর্ন্ বাজিয়ে বাস চালিয়ে ড্রাইভার আসে দেরী করে! রেগে যেন মনে হয় চড়াই উহারে। ফুলস্পীডে চলে যায়, কোন দিকে নাহি চায়, যাত্রীগুলি নিরুপায়,গাদাগাদি হয়ে ভেতরে- রেগে যেন মনে হয় চড়াই উহারে। ঐ কন্ডাক্টার কই যাস কোন বিদেশে? বারেক ভিড়া গাড়ি স্টপেজে এসে। যাবি যেথা যাইতে চাস, চাপা দিবি যারে পাস- শুধু তুই ছিড়ে নে ক্ষনিক হেসে আমার সোনার টিকিট কাউন্টারেতে এসে। যত চাবি তত যাত্রী ঠাসাবি বাস ভরে। জায়গা আছে?- জায়গা নাই, ওঠা ছাদের উপরে। এতকাল বাস কাউন্টারে সিটের স্বপ্ন নিয়ে ছিনু ভুলে সেই স্বপ্ন দিলাম তুলে থরে বিথরে- এখন আমারে ল করুনা করে। ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট সে গাড়ি আগের স্টপেজের প্যাসেঞ্জারে গিয়াছে ভরি। দ্বিগুন ভাড়া বৃদ্ধি করে কত সিএনজি ঘুরে ফিরে, শূণ্য বাস কাউন্টারে রহিনু পড়ি- যাত্রী যা ছিলো নিয়ে গেলো সোনার গাড়ি।
১. বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়া 'বিমান' পালকিতে চড়িয়া নারায়ন মুখোপাধ্যায় এর ছোট ছেলে দেবদাস ৫ বৎসর পর বিলেত হইতে দেশে ফিরিতেছে । দেবদাসের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরিয়া গ্রাম জুড়িয়া ব্যাপক চাঞ্চল্য ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হইয়াছে। পুত্রের দেশে ফিরিবার সংবাদ বিশ্বব্যাপী প্রকাশ করিতে দেবদাসের মাতা 'কৌশল্যা' টুইটারে টুইট করিলেন 'my son coming soon' , ইহাতে কিঞ্চিত বিপত্তি ঘটিয়া গেল ! অনেক 'গণ্ডমূর্খ' ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কৌশল্যা কে 'গর্ভবতী' ভাবিয়া অনাগত সন্তানের মঙ্গল কামনা করিয়া বসিল !!! বিলেতে বসিয়া দেবদাস দেশের কোন খবর লইতনা বলিলেই চলে। তাইতো যাত্রাকালে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হইতে দেশ ত্যাগ করিলেও দেশে ফিরিয়া দেখিলো একি আদলে নতুন আরেকটা বিমানবন্দর তৈরি হইয়াছে , নাম 'শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর' । দেশের এমন উন্নতি দেখিয়া দেবদাস খুশি না হইয়া পারিল না ! তবে ঢাকা হইতে মহাসড়ক ধরিয়া বাড়ি পৌছাইতে পৌছাইতে দেবদাস যোগাযোগমন্ত্রীর চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করিল। সড়কের চরম দুরাবস্থা দেবদাসের বিলাতি কোমরকে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ঢাকার লোকাল বাসের বডির ন্যায় লক্কর-ঝক্কর করিয়া দিল। দেশে ফিরিয়া দেবদাসের ভালই সময় কাটিতে লাগিল । বেশ কতক নতুন টিভি চ্যানেল আসিয়াছে । মাই টিভি , মোহনা টিভি দেখিতে দেখিতে দেবদাসের ছোটবেলার বিটিভির কথা মনে পড়িতে লাগিল । এ যুগের বিটিভিও হয়ত এই চ্যানেলগুলা দেখিয়া লজ্জা পায় !! দুএক দিনের মধ্যেই 'প্রতিবেশী' পারুর সাথে দেবদাসের দেখা হইল । পারু তাহার ছোট্টবেলার 'ফ্রেন্ড' ! তের বছরের পারু আঠারোতে পা দিয়াছে । পাচ বছরে তাহার রুপ-লাবন্য-যৌবন হু হু করিয়া বাড়িয়াছে । ছোটবেলার ফ্রেন্ডকে এইবেলায় 'গার্লফ্রেন্ড' হিসাবে পাইতে দেবদাসের মন আনচান করিয়া উঠিল । এছাড়াও দেবদাসের ফেসবুক রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দীর্ঘদিন যাবৎ single হিসেবে পড়িয়া রহিয়াছে । যৌবনকালে এই স্ট্যাটাস দেখিতে বরই কদাকার । তবে পারু দেবদাসকে দেখিয়া তেমন একটা পাত্তা দিলনা । উল্টো তাকে দেখাইয়া দেখাইয়া সে ফোনে আলাপ করিতো । টানা দু তিন দিন সেই দৃশ্য দেখিয়া একদিন দেবদাস পারুর হাতে ধরিয়া শাকিব খানের ন্যায় চিৎকার করিয়া বলিল 'কেন পারু, কেন? কি অপরাধ করেছি আমি? বল পারু বল? কেন তুমি আমার সাথে এমন করছ পারু, কেন? আমি তোমাকে এখনো ভালবাসি পারু ...'' পারু ঝটকা মেরে হাত সরাইয়া নিয়া বলল 'সময়, নদীর স্রোত এবং নারীর মন কারো জন্য অপেক্ষা করেনা দেবদাস । শুন্যস্থান পুরন করে নিতেই হয়'' পারুর মনের খবর বাহির করিতে দেবদাস উঠিয়া পড়িয়া লাগিল । বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সুত্রে দেবদাস খবর পাইল, তাহার অনুপস্থিতিতে পারু 'কোটা' ভিত্তিক পদ্ধতিতে চার চারটি প্রেম করিতেছে । কলেজে একজন , কোচিঙে একজন , গ্রামে একজন আর এলাকায় একজনের সাথে । পারু তাই চার সিমযুক্ত চাইনিজ ফোনসেট ব্যবহার করে ! কিন্তু দেবদাস হার মানিবার পাত্র নয়! সে পারুর হাত হইতে চার সিমওয়ালা ফোনসেট কাড়িয়া নিয়া, এক সিমের দামী ব্ল্যাকবেরি ফোন তুলিয়া দিল । ফোন বদলের সাথে সাথে পারুর মন ও বদলিয়া গেল। সে দেবদাসকে জড়াইয়া ধরিয়া বলিল 'আমি তোমাকে এখনো ভালবাসি দেবু, বিলেত গিয়ে তুমি আমাকে ভুলে গেছ দেখে আমি অন্য ছেলেদের সাথে শুধু গণসংযোগে ব্যাস্ত ছিলাম... এই যা...' দুটি হৃদয় এক হইল । অতঃপর দুইজনে মিলিয়া ঘরের কোনে , ক্ষেতের আইলে , কাশফুলের বাগানে , পুকুরের ঘাটে , নৌকার উপরে , গোয়াল ঘরে , গাছের ডালে বসিয়া ডেটিং করিয়া যাইতে লাগিল । তবে এমন কিছুই করিল না , যা আধুনিক ছেলে-মেয়েরা প্রেমের নামে করিয়া থাকে !!! এরি ফাঁকে দেবদাস তাহার ফেসবুক রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস বদলাইয়া "single" to "in a relationship"করিল । পারুর সাথে সারাদিন ঘুরাঘুরি করিয়াও দেবদাসের সাধ মিটিত না । তাই রাতেও যাতে তাহারা একে অপরের সাথে লাইভ ভিডিও চ্যাট করিতে পারে সে জন্য দেবদাস পারুকে একখানা 'দোয়েল' ল্যাপটপ কিনিয়া দিল । ২. দেবদাস ও পারুর প্রেমের গ্রাফের এমন ঊর্ধ্বগতি দেখিয়া পারুর মা মহা উতসাহে দেবদাসের মায়ের কাছে তাদের বিবাহের প্রস্তাব লইয়া গেলেন । দেবদাস মনে মনে আশা করিল খুব দ্রুতই তাহার স্ট্যাটাস "in a relationship" থেকে ''engaged'' এ দাঁড়াইবে , অতঃপর ''engaged'' to ''married''.... কিন্তু বিবাহের আলাপ তিস্তা চুক্তির ন্যায় বিফলে গেল । উল্টো দেবদাসের মা 'কৌশল্যা' দুই পরিবারের আভিজাত্যের তফাত দেখাইয়া পারুর মা কে অপমান করিয়া তারাইয়া দিলেন। সব অপমান সহ্য করিয়া পারুর মা সুচিত্রা 'দ্রুত বিবাহ ট্রাইব্যুনাল' গঠন করিয়া পারুর বিবাহের দিন তারিখ ঠিক করিলেন। সপ্তাহখানেকের মধ্যে পারুর বিবাহ হইল । স্বামীর নাম ভুবন চৌধুরী । অভিজাত পরিবারের সন্তান হইলেও ভুবন চৌধুরী ছিলেন বিপত্নীক ও তিন সন্তানের পিতা। দেবদাস ও পারুর আর ভিডিও চ্যাট করা হইল না । পারুও আলমারির কোনে 'দোয়েল' ল্যাপটপ খানা যত্নে তুলিয়া রাখিল। আর দেবদাস তাহার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস চেঞ্জ করিতে বাধ্য হইল । 'in a relationship' to 'its complicated'. পারুর সাথে বিবাহ না হয়ায় দেবদাস মানসিক ভাবে ভাঙ্গিয়া পড়িল । সে দৈনিক 'প্রথম আলু' পত্রিকার সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ছুটির দিনেতে 'আপনার সমস্যা' বিভাগে চিঠি লিখিল 'আমি আমার গ্রামের এক মেয়েকে খুব ভালবাসিতাম , তাহার সাথে আমার বিবাহ হওয়ার কথা থাকিলেও হয়নি , ইহাতে আমি মানসিক ভাবে ভাঙ্গিয়া পড়েছি । বর্তমানে খুব হীনমন্যতায় ভুগিতেছি ! এখন আমি কি করিবো ? ম্যাগাজিনের আপা উত্তর দিলেন 'তোমাকে ভেঙ্গে পরলে চলবে না , দ্রুত ঢাকা গিয়ে ভাল কোন মানসিক বিশেষজ্ঞ দেখাও।' দেবদাস তাই করিল । বন্ধু চুনিলালকে লইয়া সে ঢাকা গেল । যাইবার কথা ছিল 'মানসিক বিশেষজ্ঞের নিকট, কিন্তু চুনিলালা বলিল 'ইহাতে মনে হয়না কোন উপকার হইবে, খামাকা কতক টাকা নস্ট হইবে , এরচাইতে গুলশান ক্লাবে গিয়া সামান্য মউজ-মাস্তি করিলে মানসিক অবস্থার এমনিতেই উন্নতি হইবে।'' দেবদাস সায় দিল । গুলশান ক্লাবে গিয়া তরল মদ গিলিতে গিলিতে তাহাদের সাথে পরিচয় হইল 'চন্দ্রমুখি' নামক এক মডার্ন 'বাইজী্র' সাথে । চন্দ্রমুখী আবার ছিল ইয়াবার ডিলার । তাই 'ইয়াবার' নতুন কাস্টমার ধরিতে সে দেবদাসের সাথে ভাব জমাইয়া ফেলিল । পুরাতন প্রেমের জ্বালা ভুলিতে দেবদাস এক হাতে মদ আর অন্য হাতে ইয়াবা তুলিয়া নিল । আর হৃদয়ে স্থান দিল সুন্দরী চন্দ্রমুখীকে । অতঃপর রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস আরেকদফা চ্যাঞ্জ হইল। এদিকে পারু শ্বশুরবাড়ির সকলকে, এমনকি মৃতা সতীনের ছেলেমেয়েদেরও আপন করিয়া লইলো। সুগৃহিণীর মতো বাড়ির সব দায়দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলিয়া নেওয়ায় ল্যাপটপ খানা ছাড়িয়া অনলাইনে আসিবার সময়ও সে পাইতনা । তাই ল্যাপটপ 'দোয়েল' খাঁচার মধ্যে বন্দী হইয়াই পড়িয়া থাকিল । তবে দেবদাসকে সে ভুলিল না । পারুর মনের হার্ডডিস্ক হইতে দেবদাসের নাম ডিলিট হইলেও 'রিসাইকেল বিনে' ছিল তাহার সরব উপস্থিতি। ৩. চন্দ্রমুখীর সাথে অবাধ মেলামেশা ও মদ্যপান দেবদাসকে গ্রাস করিয়া ফেলিল । মদ্যপান করিতে করিতে অবস্থা এমন দাঁড়াইল যে প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাহার পাজামার গিট খুলিয়া যাইত! এসকল ঘটনা পারুর কানে আসিতে সময় লাগিল না। দেবদাসের মদ্যপান পারুকে দারুন ভাবে আলোড়িত করিল । সে ফেসবুকে ঢুকিয়া দেবদাসের সম্পর্কে খোঁজ খবর লইবার চেষ্টা শুরু করিল । দেবদাসের ফেসবুক রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসে 'in a open relationtip with chondromukhi' দেখিয়া পারু চমকিয়া উঠে ! পারু এক খানা লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া মনে মনে বলিল 'মানুষ মরে গেলে পচে যায়, আর বেচে থাকলে ফেসবুক রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস চেঞ্জ করে' !! চন্দ্রমুখি সম্পর্কে জানিতে পারুর ইচ্ছা হয়। সে তাহাকে ফ্রেন্ড রিকুএস্ট পাঠায়, চন্দ্রমুখী তা একসেপ্টও করে। পুঁজোর event create করিয়া পারু চন্দ্রমুখিকে পুজোর নিমন্ত্রন করে । চন্দ্রমুখি তাহাতে রাজী হইয়া পারুদের পুজোও দেখিতে আসে। পুঁজোর অনুষ্ঠানে চন্দ্রমুখীকে দেখিয়া পারুর স্বামী ভুবন চৌধুরী চমকে উঠিলেন। ইউটিউবে তিনি চন্দ্রমুখীর প্রচুর নাচের ভিডিও আগে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন । বেশ কিছু ডাউনলোডও করিয়াছিলেন । সে কথা তিনি সকলের সামনে ফাঁস করিয়া দেব । চন্দ্রমুখীও অপমানিত হইয়া জনসম্মুখে পারু ও দেবদাসের পুরাতন প্রেমের রোমাঞ্চকর কাহিনি বলিয়া দেয়। সব শুনিয়া পারুর স্বামী ভুবন চৌধুরী পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পারুকে গৃহবন্দি করিয়া গৃহে সামরিক শাসন জারি করিলেন । এমন ঘটনায় দেবদাস আর চন্দ্রমুখীর সম্পর্কে চিড় ধরিল। আর দেবদাস তাহার ফেসবুক ফ্রেন্ডদেরকে জানাইয়া দিল যে 'debdas went from being ''in a open relationtip with chondromukhi'' to ''single'' এদিকে মদ খাইতে খাইতে দেবদাসের অবস্থা 'যায়যায়দিন' । ডাক্তার তাকে দেখিয়া বলিলেন 'টাইম শর্ট, বড়জোর এক সপ্তাহ।' মরিবার আগে দেবদাসের পুরাতন প্রেম আরকবার জাগিয়া উঠিল । শেষবেলায় সে শুধু একবার পারুকে দেখিয়া যাইতে চায় । তাই তাহার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস আরেক দফা বদলাইয়া দাঁড়াইল "single" to "it's complicated."... ৪. মৃত্যুর দোয়ারে পতিত হইয়া একদিন দেবদাস পারুর বাসার সামনে আসিয়া হাজির হইল। উদ্দেশ্য পারুকে একটিবারের জন্য দেখিয়া শেষ নিঃশ্বাস ফেলা । কিন্তু সে জানিতে পারিল, পারু গৃহবন্দী । এক্স-বয়ফ্রেন্ড হিসেবে দেবদাসও এক্স-গার্লফ্রেন্ডের বাড়ির ভিতরে ট্রানজিট সুবিধা পাইবে না । কিন্তু পারুকে তাহার একনজর দেখিতেই হইবে । এমন রাজনৈতিক সমীকরণে শেষ ভরসা ভিডিও চ্যাট !! দেবদাস ফেসবুকে ঢুকিয়া পারুকে ওয়াল পোস্ট করিল 'ami ar beshikkhon tikbo na... skype a asho... tomake shesh barer moto dekhi...' পারু ফেসবুকে অনলাইনেই ছিল। সে তৎক্ষণাৎ কমেন্ট করিল 'omg ! ok :'(' দেবদাস skype এ ঢুকিয়া পারুর অপেক্ষা করিতে লাগিল । পারুও প্রথমবারের মত 'দোয়েল' ল্যাপটপে ভিডিও চ্যাট করিবার জন্য প্রস্তুতি নিল । কিন্তু বাধিল বিপত্তি , 'দোয়েল পাখির' জানে এতো লোড সহ্য হইলনা । বুম করিয়া একখানা আওয়াজ দিয়া 'দোয়েল' পাখি উরিয়া গেল । একি সাথে দেবদাসের দেখা পাইবার সকল সম্ভবনার অবসান ঘটিল। স্কাইপ এ বসিয়া অপেক্ষা করিতে করিতে পারুর গৃহের সামনেই দেবদাসের মৃত্যু ঘটিল । আর শেষবারের মত দেবদাস ফেসবুকে লিখিয়া গেল 'ক্ষ্যাতা পুরি তোর relationship status' এর'..।

Md Raihanuddin

আরে আরে , একি !! অফিস থেকে ফিরেই আমি এইগুলা কি দেখি , হাত-পা তুলে মুখ ফিরিয়ে একা বসে আছো, খেতে কিছু দেবে , নাকি রান্না হয়নি আজো ?? :-*:-* কি বললে মিথ্যুক আমি !! :-*:-*রাখিনা কোন কথা কোন কথাটা মিস হয়েছে দেখাও দেখি যথা । তোমায় নিয়ে যাইনা কোথাও এইকি অভিযোগ,X(X( আরে ; বেশী ঘুরলে হয়ে যাবে ঘুরাঘুরির রোগ । আর তাছাড়া, এইতো সেদিন , গত রবিবারে , শশুর বাড়ি ঘুরে এলাম তোমায় নিয়ে ঘাড়ে । তুমি বল রমনা যেতে তোমায় নিয়ে সাথে , সেইখানেতে ঝোপ জঙ্গল ,কেঊ কি যায় সাধে । কি বললে কিপটা আমি , দেইনা কিছু কিনে, কেন কেন ! গত বছর ,দিলাম তোমায় দুটো শাড়ি এনে , দুই শাড়িতে দুইটি বছর এমনি চলে যাবে , সামনের বছর আসুক তখন আরো দুটো পাবে । আবার কি চাও ? :-*গয়না গাটি ! সেটা আবার কেন ? এমিটেশন কতগুলো কিনে দিলাম যেন ? সোনার গয়না ??:-/:-/ এত বোকা নই , তা জেন রেখে , দামি জিনিস কিনে দিয়ে ডাকাত আনবো ডেকে !! আরে আরে ! চললে কোথায় ব্যাগ গুছিয়ে সাথে , বাপের বাড়ি ! তা ঠিক আছে , ভাড়া আছে হাতে ?? আমি দেব ?X((X(( মোটেও না , এখন মাসের শেষ , বাপের বাড়ি ঘুরতে যাবে ঘুরে এসো বেশ । লক্ষী সোনা , B-) যাওয়ার আগে একটু যাও তো শুনে , ওখান থেকে হাজার পাঁচেক টাকা এনো গুনে । 8-| তোমার বাবা বাড়িওয়ালা , পারবে ঠিকই দিতে , B:-/ :-0 :-0 :-0 মনে করে এনো কিন্তু খেয়াল রেখো পথে ।
শু জুতা পরে গেলাম ইন্টরভিউতে, প্রশ্ন না করে বলে ‘মামা’ দিতে। চাকরি খুঁজে খুঁজে জুতার তলা গেছে ছিঁড়ে, চাকরি তো পাই নাই মাঝ দিয়া চিনছি পুরা শহরটাই। আজও আমি অলিতে খুঁজে যাই চাকরি, কোথাও দেখলে লিফলেট সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে পড়ি। যোগাযোগ করে যখন সেখানে যাই, বলে হাত নেড়ে ‘মামা’ আগে চাই। প্রতিদিন সকালে আব্বা ডায়ালগ মারে, চাকরি না খুঁজে বেলা করে ঘুমায় এ কেমন পোলারে! আব্বার কথা শুনে থাকতে পারি না ঘুমায়ে, কান্না আসে ছেপে আর কত টানবে আমারে। জিএফ দিছে কল বলছে দেখা করতে, বাইড়া গেল বুকের কাঁপন জানি বলবে তাড়াতাড়ি বিয়া করতে। কেমনে তারে বুঝাই চাকরি না পেয়ে কেমনে প্রস্তাব পাঠাই? বেকার ছেলের কাছে মেয়ে দিবে কোন ভরষায়! চাকরি নাই বলে জিএফ গেল ছেড়ে, বলতে পারব নাতো কোন কালে “চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছ, সম্বন্ধটা এবার তুমি ভেস্তে দিতে পারো। বেকার আমি চলেছি নিরুদ্দেশ, চেহারায় ভাসে হতাশার ক্লান্তি লেশ। মামা,টাকার জোরে তারা চাকরি পেয়ে যায়, এসব আমার নেই বলে মেধার মুল্য নাই। উৎসর্গ : সকল বেকার যুবকদের
(বিঃদঃ ইহা একটি ১৪ ফেব্রুয়ারির চেতনায় উদ্ভূত প্যারডি কবিতা :p ;) ) ১৪ ফেব্রুয়ারির কত দেরি সুন্দরী? এখনো তোমার হৃদয় ভরা মেঘে? প্রেম ভালবাসা এখনো ওঠেনি জেগে? তুমি স্বপনে, তুমি জাগরনে.... সারাটা দিবস তোমায় ভেবে যে মরি! ১৪ ফেব্রুয়ারির কত দেরি সুন্দরী? জীবনের কত বসন্ত শেষে... কোন প্রান্তরের কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে। এ কী বেদনা....জীন্দেগানীর বা'ব তোলে মর্সিয়া ব্যাথিত দিলের তুফান শ্রান্ত খা'ব অস্ফুট হয়ে ক্রমে উড়ে যায় জীবনের লাল ঘুড়ি। তুমি স্বপনে, তুমি জাগরনে সারাটা দিবস তোমায় ভেবে যে মরি। ১৪ ফেব্রুয়ারির কত দেরি সুন্দরী? রমনায় গিয়ে বালকেরা দিন গোনে বুঝি দখিনা হাওয়ায় তোমার জুতার ধ্বনি শোনে বুঝি কুয়াশায়,জোছনা মায়ায় ওড়না খানি দেখে... আহা,পেরেশান বালকের দল বটমূল কিনারে জাগে তকদিরে নিরাশার ছবি এঁকে। ঘাসে সবুজের রমনাতে ঘুরে চলছি কোথায়? কোন সীমাহীন দূরে? তুমি স্বপনে,তুমি জাগরনে একাকী রাতে তোমায় ভেবে যে মরি... ১৪ ফেব্রুয়ারির কত দেরি সুন্দরী? শুধু ছলনায়,শুধু প্রেমের ঘোরেতে ফেলে পথ সীমাহীন ভ্রান্তি নিয়েছ তুলে। তোমাদের ছলায়-কলায়, পথের কিনারে বালকের দল বসি দেখছে সভয়ে, ধোকা দিয়েছে, তাদের প্রেয়সী! তোমাদের খেলার ধূলায় লুটায়ে পড়ি... কেটেছে তাদের দুর্ভাগ্যের বিস্বাদ শর্বরী। প্রেমিকের দল মাঝে তোমারা উঠিয়েছ আহাজারি ঘরে ঘরে ওঠে ক্রন্দন ধ্বনি, আওয়াজ শুনছি তারি...! ও কি বাতাসের হাহাকার - ও কি রোনাজারি প্রেমিকের ও কি বাস ট্রাকের গর্জন ও কি বেদনা দেবদাসের।। ও কি প্রেমাতুর পঁাজরায় বাজে মৃত্যুর জয়ভেরি।। সুন্দরী!! জাগো রমনার কৈফিয়তের তীব্র ভ্রূকুটি হেরি, জাগো অগনন প্রেমাতুর মুখের নীরব ভ্রূকুটি হেরি। চেয়ে দেখ ১৪ ফেব্রুয়ারির কত দেরি,কত দেরি! ((বিঃদ্রঃ সকল বালিকা নিজেদের সুন্দরী ভাবিয়া কবিতার বিরোধীতা করলেই আমি কাইন্দা বাচি... :p ))
মুল কবিতা . . . . স্বাধীনতার সুখ . . . রজনি কান্ত সেন ==================================== গায়ের দরিদ্র ছেলেটা কে ডেকে বলিছে সোনাই ভাঙ্গা ঘরে থাকো তুমি, সুখ আনন্দ ছাড়াই, আমি থাকি টিভি ল্যাপটপ নিয়ে পাঁচ তলার পরে বিদ্যুৎ বিহীন থাকো তুমি, তোমার ভাঙ্গা ঘরে । ছেলেটা বললো হেসে, আমার বাড়িতে নিঃশ্বাস নেই প্রানটি ভরে চালের ফুটোয় জোছনার আলো পরে ঝরে ঝরে। টিভি দেখ বন্দি ঘরে, প্রানটি ভরে খেল ল্যাপটপের সাথে আমার গায়ের সবুজ বরন মায়ের আঁচল ধরে খেলি আর হাটি পথে পথে । সবুজ মাঠে ক্রিকেট খেলি তুমি ঘরে বন্দি কৃত্রিম জগত নিয়ে বাহাদুরী এই দুঃখে কান্দি। তুমি চালাও ব্যাটারীর গাড়ি সময় কাটে, আটকা থাকো ঘরে তৃষ্ণা যে মিটাই আমি সবুজ বরন পথটি ধরে বাংলা মাকে দেখি নয়ন ভরে।